পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ২য় পত্র - তড়িৎ দ্বিমেরু

এক জোড়া সমান ও বিপরীত বিন্দু আধান অল্প দূরত্বে অবস্থিত থাকলে তাকে তড়িৎ দ্বিমেরু বলে। 

পানি (H2O), ক্লোরোফরম (CHCI3) এবং অ্যামোনিয়া (NH3) অণু হচ্ছে স্থায়ী তড়িৎ দ্বিমেরুর কয়েকটি উদাহরণ। এসব অণুতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান বণ্টনের কেন্দ্র কখনো সমপাতিত হয় না। ২.৭ চিত্রে একটি তড়িৎ দ্বিমেরু দেখানো হচ্ছে। এতে দুটি সমান ও বিপরীত বিন্দু আধান '-' এবং '+q' এর মধ্যবর্তী দূরত্ব 2l । কোনো তড়িৎ দ্বিমেরুর ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানের মধ্য দিয়ে অতিক্রমকারী সরলরেখাকে ঐ তড়িৎ দ্বিমেরুর অক্ষ বলে। একটি তড়িৎ দ্বিমেরুর সবলতা পরিমাপ করা হয় তার তড়িৎ দ্বিমেরু ভ্রামক (electric dipole moment) দ্বারা। তড়িৎ দ্বিমেরু ভ্রামক একটি ভেক্টর রাশি এবং একে p দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যে কোনো একটি আধান এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের গুণফল দ্বারা এর মান পরিমাপ করা হয়। সুতরাং

 তড়িৎ দ্বিমেরুর যেকোনো একটি আধান এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের গুণফলকে তড়িৎ দ্বিমেরু ভ্রামক বলে।

:- p = q × 2l

p এর দিক হয় তড়িৎ দ্বিমেরুর অক্ষ বরাবর ঋণাত্মক আধান থেকে ধনাত্মক আধানের দিকে। এর একক হচ্ছে কুলম্ব মিটার। (Cm)।

একটি তড়িৎ দ্বিমেরুর জন্য তার অক্ষের ওপর কোনো বিন্দুতে তড়িৎ প্রাবল্যের রাশিমালা 

  কোনো তড়িৎ দ্বিমেরুর ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানের মধ্য দিয়ে অতিক্রমকারী সরলরেখাকে ঐ জড়িৎ দ্বিমেরুর অক্ষ বলে।

ধরা যাক, 2l দূরত্বে অবস্থিত - q ও + q দুটি বিন্দু আধানের সমন্বয়ে একটি তড়িৎ দ্বিমেরু পঠিত (চিত্র: ২.৮)। মনে করি ও + q আধান দুটি K তড়িৎ মাধ্যমাঙ্ক বিশিষ্ট মাধ্যমে যথাক্রমে A ও B বিন্দুতে অবস্থিত । এই তড়িৎ দ্বিমেরুর মধ্যবিন্দু O থেকে তার অক্ষের ওপর r দূরত্বে অবস্থিত P বিন্দুতে তড়িৎ প্রাবল্য নির্ণয় করতে হবে।

এখন A বিন্দুর - q আধানের জন্য P বিন্দুতে প্রাবল্য,

E1=14πoKq(r+l)2E1=14πoKq(r+l)2

 

চিত্র : ২.৮

আবার, B বিন্দুর q আধানের জন্য P বিন্দুতে প্রাবল্য,

E2=14πoKq(r+l)2

যেহেতু E1 এবং E2 একই সরলরেখা বরাবর বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে এবং E2 > E1 সুতরাং P বিন্দুতে লব্ধি প্রাবল্য E হবে,

E = E2 - E1 এর দিক হবে E2 এর দিকে তথা PD বরাবর

E=14πoKq(r+l)214πoKq(r+l)2=q4πoK [1(r+l)21(r+l)2]=q4πoK [(r+l)2(rl)2(r2+l2)2]=q4πoK× 4rl(r2l2)2

:- E=14πoK2pr(r2l2)2

এই প্রাবল্যের দিক থিমের অক্ষ বরাবর ঋণাত্মক আধান থেকে ধনাত্মক আধানের দিকে। 

বিশেষ ক্ষেত্র : যদি P বিন্দুটি দ্বিমেরু থেকে অনেক দূরে হয় (অর্থাৎ যদি r >> l হয়), তাহলে r2 এর তুলনায় l2 কে উপেক্ষা করা যায়। সেক্ষেত্রে

E=14πoK2pr3

যে বিন্দুর প্রাবল্য নির্ণয় করতে হবে, সে বিন্দুটি যদি মধ্য বিন্দুর বাম দিকেও অবস্থিত হয়, তাহলেও তড়িৎ প্রাবল্যের দিক হবে বিষের অক্ষ বরাবর কণাত্মক আধান থেকে ধনাত্মক আধানের দিকে। একটি তড়িৎ ছিমেরুর জন্য তার অক্ষের ওপর কোনো বিন্দুতে তড়িৎ বিভবের রাশিমালা কোনো তড়িৎ দ্বিমেরুর ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানের মধ্য দিয়ে অতিক্রমকারী সরলরেখাকে ঐ তড়িৎ দ্বিমেরুর অক্ষ বলে।

ধরা যাক, 2l দূরত্বে অবস্থিত - q ও + q দুটি বিশ্ব আধানের সমন্বয়ে একটি তড়িৎ দ্বিমেরু গঠিত (চিত্র ২.৯)। মনে করি – q + q আধান দুটি K তড়িৎ মাধ্যমাক্ষবিশিষ্ট মাধ্যমে যথাক্রমে A ও B বিন্দুতে অবস্থিত এ তড়িৎ দ্বিমেরুর মধ্যবিন্দু থেকে তার অক্ষের ওপর r দূরত্বে অবস্থিত P বিন্দুতে তড়িৎ বিভব নির্ণয় করতে হবে।

চিত্র :২.৯

এখন A বিন্দুর - q আধানের জন্য P বিন্দুতে বিভব,

V1=14ποKq(r+l)

আবার, B বিন্দুর q আধানের জন্য P বিন্দুতে বিভব,

V2=14ποKq(rl)

এখন P বিন্দুর বিভব হলে,

V = V1 + V2 

বিশেষ ক্ষেত্র : যদি P বিন্দুটি দ্বিষের থেকে অনেক দূরে হয় (অর্থাৎ যদি r >>] হয়), তাহলে r2 এর তুলনায় P কে উপেক্ষা করা যায়। সেক্ষেত্রে

V=14ποKqr2

শূন্যস্থান (বা বায়ু) হলে K = 1, সুতরাং

V=14ποqr2

একটি তড়িৎ বিমেরুণ দৈর্ঘ্যের লম্ব সমধিকের উপর অবস্থিত কোনো বিন্দুতে তড়িৎ প্রাবল্য ও বিভবের রাশিমালা

 

চিত্র :২.১০

ধরা যাক, A বিন্দুতে + q এবং B বিন্দুতে - 9 দুটি বিন্দু চার্জ শূন্যস্থানে পরস্পর থেকে 21 দূরত্বে থেকে একটি তড়িৎ দ্বিমেরু গঠন করেছে (চিত্র ২.১০)। দ্বিমেরুটির লম্ব সমদ্বিখণ্ডকের উপর P একটি বিন্দু। দ্বিমেরুর মধ্যবিন্দু O থেকে P বিন্দুটি দূরত্বে অবস্থিত। P বিন্দুতে তড়িৎ প্রাবল্য নির্ণয় করতে হবে। A বিন্দুতে +q চার্জের জন্য P বিন্দুতে প্রাবল্য,

EA=14πoKq(r2+l2) বিকর্ষণ বল ।

EA এর দিক হবে PS বরাবর। B বিন্দুতে –q চার্জের জন্য P বিন্দুতে প্রাবল্য,

EB=14πoq(r2+l2)  আকর্ষণ বল

EB -এর দিক হবে PT বরাবর।

ধরা যাক, θ

 :- θ

সুতরাং ভেক্টরের সামান্তরিকের সূত্রানুসারে P বিন্দুতে লব্ধি প্রাবল্য,

Content added || updated By

Promotion